• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

ক্যাম্পাস

বিশ্বের মানচিত্রে ভাষাকে উপজীব্য করে একমাত্র স্বাধীন দেশ বাংলাদেশ : জবি উপাচার্য 

  • ''
  • প্রকাশিত ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

জবি প্রতিনিধি:

নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) তে ‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’ শীর্ষক মহান ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪  উদযাপন করা হয়েছে ।  বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১.০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্য চত্বরে একুশে ফেব্রুয়ারির সংগীত (আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী...) পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। 

বিশ্বের মানচিত্রে ভাষাকে উপজীব্য করে একমাত্র স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে উল্লেখ করে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, “শুধুমাত্র ভাষার মাসেই ভাষা সৈনিকদের স্মরণ করলে হবে না, তাদের আত্মত্যাগের কারণ অনুধাবন করতে হবে।  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল তার অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- তিনি ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন।  তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাও একই পথে চলছেন; কিন্তু সে পথটাও অনেক কণ্টকাকীর্ণ। কেননা আমরা এখনও বিভিন্ন ষড়যন্ত্র দেখতে পাই। তাঁর জীবনের ওপর একুশ বারের মতো হামলা করা হয়।”   

তিনি আরো বলেন, “আমার শিক্ষার্থীদেরও সচেতন থাকতে হবে, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি যেটা ধর্মের ভিত্তিতে সৃষ্ট নয়- এটা বাঙালী জাতীয়তাবাদের ওপর সৃষ্ট রাষ্ট্র, যেখানে রয়েছে বহুমাতৃকতা।  আর বহুমাতৃকতা আছে বলেই ১৯৯৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। পাহাড়ি জনগণও শেখ হাসিনায় বিশ্বাসী কারণ- তারা জানে সব সমস্যা সমাধান সম্ভব একমাত্র বঙ্গবন্ধুর কন্যার দ্বারাই।  অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রতি মর্যাদা দেওয়ার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।” 

অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক রাষ্ট্রীয় সম্মানপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন-চিন্তক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ মহান একুশে ফেব্রুয়ারিকে বাঙালি মনোজগতের আলোড়ন সৃষ্টিকারী চেতনা উল্লেখ করে বলেন, “মূলত একুশে ফেব্রুয়ারি থেকেই আমাদের স্বাধিকার ও অধিকার আন্দোলন শুরু হয়।  পরবর্তীতে ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু মুক্তির সংগ্রাম বলতে আমাদের সবার অর্থনৈতিক মুক্তি ও সমনাগরিক অধিকার বুঝিয়েছেন। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অর্থ হচ্ছে এদেশে এমন একটি সমাজ হবে- যেখানে প্রত্যেকের যে যার অবস্থানে সমান অধিকার ভোগ করবে।”

বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ হুমায়ূন কবীর চৌধুরী বলেন, “মাতৃভাষার মাধ্যমেই চেতনার কাঠামো তৈরি হয়ে থাকে।  আর নিজস্ব ভাষা বিকাশ না করে আমাদের সৃজনশীলতার দিকে যাওয়া সম্ভব নয়।  আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায়ও বাংলা ভাষার ব্যবহার আরো যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।” 

আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কলা অনুষদের ডিন ও উক্ত অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম।  এসময় আরো বক্তব্য প্রদান করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন।  অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বুশরা জামান।

আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিলো নৃত্য পরিবেশনা এবং সংগীত বিভাগের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় সংগীতানুষ্ঠান।  পরবর্তীতে সঙ্গীত বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, আবৃত্তি সংসদ ও আদিবাসী শিল্পীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল-এর প্রভোস্ট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, প্রক্টর, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব), বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, সাংবাদিকবৃন্দ ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads